শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে দেশটিতে হামলার অঙ্গীকার করেছে ইরান ও এর মিত্র গোষ্ঠীগুলো

ইসরায়েল তাদের সুরক্ষিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করছে আর হামলা মোকাবেলায় তাদের সামরিক বাহিনী উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে।

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের শীর্ষ নেতা ইসমাইল হানিয়ার হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে দেশটিতে হামলার অঙ্গীকার করেছে ইরান ও এর মিত্র গোষ্ঠীগুলো, শঙ্কিত ইসরায়েল এখন ওই সম্ভাব্য হামলা মোকাবেলার জন্য উত্তেজনা নিয়ে অপেক্ষা করছে।

ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সুরক্ষিত ভূগর্ভস্থ একটি কেন্দ্রে রক্ত সরবরাহ মজুদ করেছে, কারখানাগুলো বিপজ্জনক উপাদান সরিয়ে নিয়েছে আর শহরের কর্তৃপক্ষগুলো বোম্ব শেল্টার ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

গক বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে শুরু করে আর তারপর থেকে এক্ষেত্রে অনেক প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। কিন্তু গত ১০ দিনে এই প্রস্তুতি জরুরিভিত্তিতে জোরদার করা হয়েছে এবং দেশটির সামরিক বাহিনী উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে।

গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই উত্তর সীমান্তে লেবাননের ইরান সমর্থিত রাজনৈতিক ও সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে সীমিত পর্যায়ের সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে আছে ইসরায়েল, এখন এই সংঘাত সর্বাত্মক আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে।

বুধবার সেনাবাহিনীতে সদ্য যোগ দেওয়া সেনাদের সঙ্গে এক বৈঠকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, “আমি জানি ইসরায়েলের নাগরিকরা সতর্ক অবস্থায় আছেন, আমি আপনাদের আর একটি বিষয় বলতে চাই, ধৈর্য ধরুন ও ঠাণ্ডা থাকুন। আমরা প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ, উভয়ের জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা আমাদের শত্রুদের আঘাত হানছি আর পাশাপাশি নিজেদের রক্ষার জন্যও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”

ইসরায়েল এখন তার নিজেকে বহুমুখি যুদ্ধের হুমকির মধ্যে দেখতে পাচ্ছে। দেশটির দীর্ঘদিনের শত্রু ইরানের সমর্থনপুষ্ট হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইয়েমেনের হুতি বাহিনীর মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাদের।

তেহরানে হামাস নেতা হানিয়া ও বৈরুতে হিজবুল্লাহর সামরিক কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েলে হামলার অঙ্গীকার করেছে ইরান ও হিজবুল্লাহ। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই এই হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

তবে মাসের পর মাস সতর্ক থেকে থেকে এবং এপ্রিলে ইরানের ছোড়া কয়েকশ ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা নিজেদের আকাশ প্রতিরক্ষা ও আন্তর্জাতিক মিত্রগুলোর সহায়তায় ব্যর্থ করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল এসব সংকটের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।

দেশটির উত্তরাঞ্চলে সীমান্ত যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হিজবুল্লাহর রকেট হামলার আওতার মধ্যে থাকা এলাকাগুলো থেকে হাজার হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে অনেক সীমান্ত এলাকা ভুতুরে ও পরিত্যক্ত হয়ে আছে।

কিন্তু হিজবুল্লাহর রকেটগুলো আরও ভেতরে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় হাইফা বন্দরের মতো স্পর্শকাতর লক্ষ্যস্থলগুলোতে পৌঁছে যেতে পারে। এসব স্থাপনা ভালোভাবেই হিজবুল্লাহর রকেটের আওতার মধ্যে আছে।

হাইফা শহরের রামবাম হাসপাতাল গত অক্টোবর থেকেই উচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে আর তারা আরও তিনটি তলা তৈরি করে জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রেখেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে রোগীদের চিকিৎসা দিতে ভূর্গর্ভস্থ স্থাপনাও তৈরি করেছে।

হাসপাতালটির মুখপাত্র ডেভিড র‌্যাটনার বলেছেন, “কী হয় তা দেখার অপেক্ষায় আছি আমরা।সূত্রঃ  বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

B.N24-08.0.824

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *